আসছে জাতীয় ডেবিট কার্ড ‘টাকা পে’

তথ্যপ্রযুক্তি দিনকাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখন থেকে কেউ ভারতে গেলে তাঁর ভ্রমণ খরচের যে কোটা আছে, সেই পরিমাণ অর্থ তিনি রুপিতে কেনাকাটা করতে পারবেন। ফলে ডলারে রূপান্তর এবং এর পরে রুপিতে খরচ করার ‍যে বিনিময় ক্ষতি সেটা আর হবে না। এতে দেখা যাবে ৬ শতাংশের মতো অপচয় কমবে। কারণে এই নভেম্বরেই আসছে বাংলাদেশের জাতীয় ডেবিট কার্ড, ‘টাকা পে’। বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেন ভারতে। তাই ভারতে গেলে কী সুবিধা পাওয়া যাবে সেই তথ্য দিয়ে লেখাটি শুরু হলো। আসেলে ‘টাকা পে’র সুবিধা পাওয়া যাবে বিশ্বের সব দেশে। এমন কী দেশের মধ্যেও।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে আটটি ব্যাংক নিয়ে জাতীয় ডেবিট কার্ডের পাইলটিং করা হচ্ছে। তিনি জানান, এই ডেবিট কার্ড ভারতীয় রুপির সঙ্গে যুক্ত করার ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। ব্যাংকগুলো হচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। এসব ব্যাংকের কয়েকজন কার্ড বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, এই কার্ডে ডুয়েল কারেন্সির মত ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতে টাকা-রুপিতে লেনদেনের সুবিধা পাওয়া যাবে।

 

এই কার্ড চালু হলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো চার্জ কমিয়ে, তাদের গ্রাহকদের ব্যবহার উদ্বুদ্ধ করবে। এর মধ্য দিয়ে বিদেশি কার্ডের নির্ভরতা কমবে। ভিসা, মাস্টারকার্ড বা বাইরের কোম্পানিগুলোর ডেবিট কার্ডের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক কার্ড স্কিমগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা হবে। এখন আন্তর্জাতিক কার্ড স্কিমগুলো যা নির্ধারণ করে দেয়, তা-ই মানতে হয়। বিদেশি কার্ড প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

 

বিশ্বজুড়ে নগদ টাকার পরিবর্তে ক্যাশলেস লেনদেনে ঝুঁকছে মানুষ ফলে দিন দিন ব্যাংকের কার্ড ব্যবহারের সংখ্যা বাড়ছে পাশাপাশি রেকর্ড লেনদেনও হচ্ছে এবছর মার্চ পর্যন্ত বিদেশি কার্ডে ৪৫ হাজার ৪১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে লেনদেন যে কোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ এতে প্রচুর অর্থ পাচ্ছে কার্ড সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু এই সেবা দিচ্ছে সব বিদেশি প্রতিষ্ঠান  কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংক্রান্ত কোনও নিজস্ব সেবা এতোদিন ছিল না তাই বিদেশি কার্ড প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা হ্রাস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে

 

বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে নিজস্ব লেনদেনের জন্য জাতীয় ডেবিট কার্ড চালু রয়েছে। এর মধ্যে কানাডার ‘ইন্টের‍্যাক’, ইতালির ‘ব্যাঙ্কোম্যাট’, চীনের ‘ইউনিয়ন পে’ উল্লেখযোগ্য। ভারতে ‘রুপে’ চালু হয়েছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে এখন স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য ‘টাকা পে’ হবে একটি নতুন মাইল ফলক।  

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরও জানান, ন্যাশনাল ডেবিট কার্ড দিয়ে প্রথম দেশের ভেতরে যেকোনো ধরনের কেনাকাটা করা যাবে। যেকোনো ব্যাংকের কার্ড দিয়ে নেটওয়ার্কের আওতাধীন সব ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে। মুদ্রার বিনিময়ের কারণে যে ক্ষতি হতো, সেটা আর হবে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কার্ড ব্যবহারের চার্জ কমিয়ে তাদের গ্রাহকদের ব্যবহার উদ্বুদ্ধ করবে।

 

এই কার্ড চালু হলে এর মধ্য দিয়ে বিদেশি কার্ডের নির্ভরতা কমবে। ভিসা, মাস্টারকার্ড বা বাইরের কোম্পানিগুলোর ডেবিট কার্ডের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক কার্ড স্কিমগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা হবে। এখন আন্তর্জাতিক কার্ড স্কিমগুলো যা নির্ধারণ করে দেয়, তা-ই মানতে হয়।

 

বিদেশি কার্ড প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কমাতে সাহায্য করবে। দেশীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত হবে, ফলে যেকোনো ব্যাংকের এটিএম ব্যবহার করা যাবে। সেবায় যুক্ত হয়ে সব ব্যাংকের এটিএম বুথ ও পিওএস মেশিন ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহকরা। অর্থাৎ, অন্যান্য ডেবিট কার্ডের মতোই ব্যবহার করা যাবে ‘টাকা পে’।

 

প্রাথমিক ভাবে এটি ৮টি ব্যাংকের নেটওয়ার্ হলেও পরর্তীতে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকে এই কার্ড চালু হবে। এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা অন্যান্য ডেবিট কার্ডগুলোর মতোই নিজ একাউন্টের বিপরীতে ‘টাকা পে’ কার্ড নিতে পারবেন। ব্যাংকের যে শাখায় একাউন্ট আছে সে শাখা থেকে গ্রাহক কার্ডের জন্য আবেদন করবেন। ব্যাংক গ্রাহককে কার্ড দেবে। কার্ড হাতে পাওয়ার পর কার্ডের জন্য গোপন সংখ্যা বা পিন সেট করে গ্রাহক কার্ডটি ব্যবহার করতে পারবেন।

 

সর্বোপরি, স্মার্ট বাংলাদেশের জনগণের জীবন মান উন্নয়ন এবং সহজলভ্য ব্যাংকিং সুবিধার ক্ষেত্রে ‘টাকা পে’ হবে একটি কার্যকর পন্থা। আর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এরই মধ্যে ন্যাশনাল ডেবিট কার্ড চালুর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে প্রধান করে দুটি কমিটি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *