যমুনা বাংলা ওয়েব ডেস্কঃ দেশে ‘ডিওবি’নামে নতুন মাদকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। আইস ও এলএসডির পর দেশে আরেকটি কৃত্রিম মাদকের অস্তিত্ব পাওয়া গেল। যেটা ডিওবি (ডাইমেথক্সিব্রোমো অ্যাম্ফেটামিন) নামে পরিচিত। সূত্রে জানা যায় যে, এলএসডির মতো ল্যাবরেটরিতে তৈরি এই মাদকও আসছে ইউরোপ থেকে।
খুলনা থেকে গত ২১ নভেম্বর ডিওবির একটি চালান উদ্ধার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। গ্রেপ্তার করা হয় আসিফ আহমেদ ও অর্ণব কুমার শর্মা নামের দুই তরুণকে। তাঁদের সহযোগী একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী মামুনুর রশীদকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় ঢাকার নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ডিএনসি গত জানুয়ারিতে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। আইনে এটি ‘ক’ শ্রেণির মাদক। এর আগে দেশে কখনোই এই মাদক ধরা পড়েনি।
মূলত খুলনা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তাঁরা এই মাদক সরবরাহ করতেন বলে তদন্তকারীরা তথ্য পেয়েছেন। ডিএনসির কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসিফ ও অর্ণব প্রথমে দাবি করেন, ডিওবি কোনো মাদক নয়। ডিওবি সেবনে ‘তৃতীয় নয়ন’ খুলে যায়—এমন প্রচার চালিয়ে তাঁরা ক্রেতা সংগ্রহ করছিলেন। ঢাকা ও খুলনায় অনেকের মধ্যে তাঁরা এটা বিক্রি করেছেন।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তরের (ইউএনওডিসি) তথ্য অনুযায়ী, গত শতকের সত্তরের দশক থেকে ডিওবি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মাদক হিসেবে প্রচলিত আছে। ডিএনসির কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের কাছে তথ্য ছিল এলএসডির (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাই–ইথ্যালামাইড) মতো এক ধরনের মাদক দেশে নিয়ে আসছে একটি চক্র। সেটা ধরতে ক্রেতা সেজে ফাঁদ পাতেন তাঁরা। তারপর কুরিয়ারে খুলনা থেকে ঢাকার নিউমার্কেটে আসে এলএসডি। ওই কুরিয়ার কোম্পানির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে একটি খামের ভেতরে থাকা এলএসডির পাঁচটি স্ট্রিপ বা ব্লট উদ্ধার করা হয়। ওই খামে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, আসিফ আহমেদ নামের এক তরুণ খুলনা থেকে মাদক পাঠিয়েছেন।
এরপর খুলনার বয়রা এলাকার বাসা থেকে ১০ ব্লট এলএসডিসহ আসিফকে আটক করেন ডিএনসির কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে আসিফ জানান, তাঁর বন্ধু অর্ণবের বাসায় বিপুল পরিমাণ ডিওবি রয়েছে। এরপর অর্ণবের বাসায় অভিযান চালিয়ে ডিওবি উদ্ধার করা হয় ৯০ ব্লট, যার ওজন ১২৬ মিলিগ্রাম। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ডার্ক ওয়েবে (ইন্টারনেটের একটা অন্ধকার জগৎ) অর্ডার করে ইউরোপ থেকে ২০০ ব্লট ডিওবি এনেছিলেন। তবে তাঁদের কাছে পাওয়া গেছে ৯০ ব্লট। বাকিগুলো তাঁরা আগেই বিক্রি করে দেন।
ক্ষতির দিক থেকে ডিওবিকে এলএসডির চেয়েও ভয়ংকর বলছেন ডিএনসির কর্মকর্তারা। সংস্থাটির প্রধান রাসায়নিক কর্মকর্তা দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, ডিওবি সেবনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, শারীরিক বৈকল্য তৈরি হয়।