যমুনা ওয়েব ডেস্কঃ গোটা বিশ্ব শিহরিত হয়ে উঠেছে ফের আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতাসীন হওয়ায় । এরই মধ্যে সেখানকার নির্বাসিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । জানা গেছে, রবিবার তালিবানদের হাতে কাবুল দখল হবার পর তিনি লাপাতা হয়ে যান। আর পালিয়ে যাবার সময় তার সাথে ছিল ১৬ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার । যদিও তার বর্তমান অবস্থান নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে । তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত আশ্রয় দিয়েছে ।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেবার ঘোষণা হতেই প্রবলভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে তালিবান জঙ্গি গোষ্ঠী । রাতারাতি আফগানিস্তানের সেনাদের হটিয়ে দিয়ে একের পর এক শহরের দখল নিয়েছে তারা । অথচ গত দুই দশক ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা বিশাল আফগান সেনাবাহিনী কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি । নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি শুধু খাতায় কলমে আফগান সেনার অস্তিত্ব ছিল ! এদিকে রবিবার তালিবান গোষ্ঠী কাবুল দখল করতেই পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ।
প্রথম দিকে গনির পালিয়ে যাওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল । বিবিসি সূত্রে খবর, তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত আশ্রয় দিয়েছে। আশরাফ গনি সম্পর্কে তাজিকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, রবিবার দেশ ছাড়ার সময় তিনি সঙ্গে ১৬ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার নিয়ে যান। এই বিষয়ে, রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জহির আগবার ব্যাখ্যা করেন যে, আশরাফ গনির আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়া ছিল দেশ ও জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা । তিনি তাজিকিস্তানের দুশানবে-তে আফগান দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
আফগান রাষ্ট্রদুত আরও দাবী করেছেন, দূতাবাস প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আ আমরুল্লাহ সালেহ-কে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন বলে উপসাগরীয় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে। এদিকে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, সংযুক্ত আরব আমিরাত মানবিক কারণে আশরাফ গনি ও তার পরিবারকে দেশে স্বাগত জানাচ্ছে।
প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি অবশ্য নিজের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন । তিনি তার এভাবে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে জানিয়েছেন, তিনি রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়েছেন। এছাড়া তিনি নাকি দেশ না ছাড়লে, তালেবানরা দেশে থাকলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলত । অন্যথায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নজিবুল্লাহর মতো একই পরিণতি অনুসরণ করত। তালেবানরা তাকে ল্যাম্পপোস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিত। যাইহোক, তিনি তার দেশবাসীকে বলেছিলেন যে তিনি চাপে সাময়িক পিঠটান দিলেও, আফগানিস্তানে ফেরার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন ।