আফগানিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার আশরাফ গণি তালেবানদের অভিযানে পতনের মুখে। তালেবান বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা গুরুত্বপূর্ণশহর, প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে। আফগানিস্তানের অন্যতম বড় শহর কান্দাহারে তালেবানদের পতাকা উঠেছে।
তালেবান বিদ্রোহীহারা দ্রুততার সাথে কাবুল দখলের জন্য চেষ্টা করছে। কাবুল থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে তালেবান বিদ্রোহীরা অবস্থান করছে। এ পরিস্থিতিতে আমেরিকা সরকার তার নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য নিজেদের নাগরিক সরিয়ে নিতে সৈন্য পাঠিয়েছে।
তালেবান বিদ্রোহীদের মুখপাত্র মুহাম্মদ সোহেল শাহীন ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এআইকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাক্ষাতকারে সৈন্য পাঠানো নিয়ে তিনি ভারতকে হুশিয়ার করেন। তিনি বলেন ভারত যদি নিজেদের উপস্থিতির জানান দেয় তা তাদের জন্য ভাল হবে না।
তবে ভারতীয় প্রতিনিধির সাথে কোন বৈঠক হয়েছে কিনা তা জানা যায় না। সোহেল শাহিন আরো বলেন, ‘যদি ওরা আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠায় তাহলে তা তাদের জন্য ভালো হবে না। আগে যারা সামরিক শক্তি নিয়ে এখানে এসেছে, তাদের ভবিতব্য দেখেছে ভারত। তো এটা তাদের জন্য খোলা বই।’
সোহেল শাহীন সংবাদ সংস্থাকে বলেন তাদের নীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের স্পষ্ট নীতি হল যে আফগান মাটি ব্যবহার করে কেউ দেশের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবে না। তাছাড়া অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধেও আমাদের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’
তবে তালেবান বিদ্রোহীরা কোন দূতাবাস বা রাষ্ট্রদূতের ক্ষতি করবে না। পাকিস্তানের সাথে তালেবানের যে যোগাযোগ রয়েছে এরকম তথ্যের কোন ভিত্তি নেই বলে সোহেল শাহীন জানান। তিনি বলেন, ‘এগুলো ভিত্তিহীন অভিযোগ। কোনও গোষ্ঠীর সঙ্গে এর কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। এগুলো আমাদের বিরুদ্ধে তৈরির নীতি অনুযায়ী ছড়ানো মিথ্যাচার। এগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার।’
প্রসঙ্গত তালেবান বিদ্রোহীদের এ ধরনের দ্রুত অগ্রযাত্রায় অনেক দেশই তাদের কর্মী ও নাগরিককে সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে। পাশাপাশি কুটনীতিকদের কাবুল ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। আমেরিকান সেনাদল তাদের আফগান দোভাষী, কুটিনীতিকদের আফগানিস্তান ত্যাগের পথে কাজ করছে।
এরইমধ্যে জাতিসংঘ প্রধান এক সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, যা বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য মোতাবেক এ পর্যন্ত আড়াই লাখের বেশি মানুষ বাড়ি ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছে আগামি ৩০ দিনের মধ্যে পুরো দেশ কাবুল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বর্তমান আফগান সরকারের পতন হতে পারে। তবে যুদ্ধের গতিপথ বদল হলে ভিন্ন কিছু হতে পারে।