যমুনা বাংলা ওয়েব ডেস্কঃ পহেলা জানুয়ারি বিপুল উৎসাহে সাড়ম্বরে বই উৎসব হবে প্রতিটি স্কুলে। শিশুরা নতুন বই নিয়ে ফিরবে বাড়ি। কিন্তু গোপালপুর উপজেলায় বিনা মূল্যের ১০ হাজার পাঠ্যবই গায়েব হওয়ায় অনেক শিশু প্রয়োজনীয়সংখ্যক বই পাবে না বলে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট পরিবহন ঠিকাদার প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার পাঠ্যবই গোপালপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীনকে চালানমূলে বুঝিয়ে দেন । নিয়ম অনুযায়ী এসব বই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের স্টোর রুমে রাখার কথা। কিন্তু শিক্ষা অফিসার এসব বই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের স্টোর রুমে না রেখে নিজ দায়িত্বে সূতি সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে দেন।
গত ২২ ডিসেম্বর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে ডেকে এনে প্রয়োজনীয়সংখ্যক বই বুঝিয়ে দেওয়ার সময় দেখা যায় পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান ৪ হাজার ৯৫০ এবং ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ৫ হাজার ৫০সহ মোট ১০ হাজার বই গায়েব হয়ে গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল করিম জানান, সব পাঠ্যবই চালানমূলে ঠিকাদারের নিকট থেকে বুঝে নিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীন। বই রাখা ঐ কক্ষের চাবিও ছিল তার নিকট। তাহলে এসব পাঠ্যবই কীভাবে হাওয়া হয়ে গেল তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতসংখ্যক বই গায়েব হওয়া নিয়ে থানাপুলিশকেও অন্ধকারে রাখা হয়েছে।
এদিকে পাঠ্যপুস্তক গায়েব হওয়ার ঘটনায় দায়িত্ব পালনের গাফিলতির অভিযোগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীনের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষ বরাবর সুপারিশ করা হবে না তার সন্তষজনক জবাব চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর শোকজ করেন টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল আজিজ।
পাঠ্যপুস্তক পরিবহন ঠিকাদার সোহেল রানা বলেন, যথাসময়ে চালানে স্বাক্ষর নিয়ে সব পাঠ্যবই উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বই গায়েব হওয়ার পর এখন তাকে দোষারোপ করার চেষ্টা চলছে। থানার ওসি মোশারফ হোসেন বলেন, বই গায়েব হওয়ার বিষয়ে শিক্ষা অফিস তাদেরকে কিছু জানায়নি।
তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ মল্লিক জানান, ঘটনাটি তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার দাবি করেছেন, ঠিকাদার বই কম দিয়েছে। অতগুলো বই একসঙ্গে গুনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই চালান বুঝে নেওয়ার সময় তিনি তড়িঘড়ি স্বাক্ষর করেছেন। এখন বিকল্পভাবে নানা স্থান থেকে এসব বই সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।