ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য কারা আবেদন করলেন, আবেদন পড়লো ৫২টি!

দিনকাল বাংলাদেশ

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যাংক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেকেই ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে আগ্রহী। ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন অনলাইনে জমা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এই ধরনের ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে এখন পর্যন্ত ৫২টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে যৌথ উদ্যোগে লাইসেন্স পাওয়ার চেষ্টা করছে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান। কোনও কোনও আবেদনে ১০টি ব্যাংকের জোটও রয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন ফি বাবদ অফেরতযোগ্য পাঁচ লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়। ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য ন্যূনতম মূলধন ১২৫ কোটি টাকা। প্রচলিত ধারার ব্যাংক করতে যেখানে প্রয়োজন হয় ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংককে কোম্পানি আইন অনুযায়ী প্রচলিত ব্যাংকের মতো সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ন্যূনতম নগদ জমা (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) বজায় রাখতে হবে।

 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনকারীদের মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্টার্টআপ কোম্পানি, মোবাইল অপারেটর, গ্যাস পাম্প কোম্পানি, ওষুধ কোম্পানি, ঢেউটিন শিট উৎপাদনকারী কোম্পানিও রয়েছে। আবার বিদেশি আর্থিক প্রযুক্তি কোম্পানিও আবেদন জমা দিয়েছে। এর বাইরে আরও চার প্রতিষ্ঠান টাকা জমা দিয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ে তারা আবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, এখন এই ৫২টি আবেদন যাচাই-বাছাই করা হবে। তারপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে উপস্থাপন করা হবে। সবকিছু বিবেচনা করার পরই সিদ্ধান্ত হবে কবে নাগাদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে, অথবা কতটি ব্যাংক লাইসেন্স পাবে।

জানা গেছে, ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ ও বিভিন্ন ফি বা চার্জ গ্রহণ সবই হবে অ্যাপভিত্তিক। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থাকবে কিন্তু কোনও শাখা থাকবে না। প্রাথমিকভাবে ডিজিটাল ব্যাংক শুধু সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ করবে।

 

ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য যারা আবেদন করেছেনঃ

‘বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক’ নামের আবেদনের সঙ্গে বর্তমান উদ্যোক্তা ব্র্যাক ব্যাংকের পাশাপাশি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মানি ইন মোশন’ এলএলসি, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, অ্যান্ট গ্রুপ ও সফটব্যাংক ভিশন ফান্ড।

এছাড়া ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ গঠনের জন্যও আবেদন করেছেন নগদের বর্তমান ও অন্যান্য কিছু উদ্যোক্তা।

‘ডিজি টেন পিএলসি’ নামে আবেদন করেছে ১০ ব্যাংকের জোট। এই জোটে রয়েছে সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।

এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, রূপালী, অগ্রণী মিলে জোটবদ্ধভাবে ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের আবেদন করেছে।

মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক ও তাদের মূল কোম্পানি ভিওন মিলে ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের আবেদন জমা দিয়েছে।

‘উপায় ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ নামে বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি উপায়ের নেতৃত্বে একটি জোট আবেদন করেছে।

এই জোটে আছে বেসরকারি ব্যাংক এনআরবিসি ও মেঘনা। এর সঙ্গে রয়েছে ইউসিবির উদ্যোক্তাদের কোম্পানি আরামিট, যারা মূলত ঢেউটিন শিট উৎপাদন করে। এই জোটে আরও আছে ইউসিবির উদ্যোক্তাদের কোম্পানি নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিস। জেনেক্স ইনফোসিস হলো এনআরবিসির কয়েকজন উদ্যোক্তার কোম্পানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *