নির্বাচনে না এসে সরকারকে নামানোর আন্দোলন বিএনপির ‘অপরাজনীতি’

দিনকাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন সারাদেশে ‘কালো পতাকা মিছিলের’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। শনিবার বিকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কালো পতাকা মিছিল শুরুর আগে সমাবেশ থেকে নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

 

 

নির্বাচনে অংশ না নিয়ে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামাকে ‘অপরাজনীতি’ বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, যে যুক্তিতে বিএনপি আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে সেটা জনগনের সাথে সম্পৃক্ত না। তারা নতুন সরকারের কাজ না দেখে, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগনের ভোটে জয়ী হয়ে দায়িত্ব পালনের সুযোগ হাতছাড়া করে, নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখার সমালোচনা করেন তারা।

 

এদিকে কালো পতাকা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে বিএনপি আবারো ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাস করার আভাস দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সোমবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কালো পতাকার নামে আবারো সন্ত্রাস, সহিংসতার জানান দিচ্ছে বিএনপি। এটা ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের আভাস। ‘জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, দ্রব্যমূল্যসহ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার স্বার্থে কালো পতাকাবাহী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করা হবে। এই অপশক্তির সাথে কোনো আপোস নয়,’ বলেন তিনি।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় মনে করেন, সরকারের শুরুর দিনে এধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি তার চেনা রূপকেই আরেক দফা সামনে আনলো। তিনি বলেন, ‘কালো পতাকা’ মিছিলের কর্মসূচি এর আগেও পালন করেছিল বিএনপি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ‘এক দফা’ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বছরের ২৫ আগস্ট কালো পতাকা মিছিল করেছিল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। বিএনপির পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোও একই দাবিতে কালো পতাকা মিছিল করে। এরপর একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের উচিত সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা। তাদের কর্মসূচির ধরণ দেখে মনে হয় এখনও তারা বাইরের কোন প্রেসক্রিপশনের অপেক্ষায় আছে।

 

নতুন সরকারের অভিষেকের দিনে কোনরকম বাধাপ্রদান বা প্রতিরোধের বিষয় করা ‘অপরাজনীতি’ ছাড়া কিছু না উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, যেকোন প্রতিবাদের রাজনৈতিক দলের অধিকারের মধ্যে পড়ে। রাজনৈতিক দলকে তাদের কর্মসূচি দেওয়ার সময় অবশ্যই জনসম্পৃক্ততা ও যৌক্তিকতার দিকগুলো মাথায় থাকতে হবে। নির্বাচনের ট্রেন মিস করার পরে বিএনপির উচিত ছিলো তৃণমূল থেকে রাজনীতি শুরু করা। এবং জনগনকে সাথে নিয়ে যৌক্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা। সেটা না করে তারা নিজেদের এজেণ্ডা বাস্তবায়নে জনগণকে সাথে নিতে চায়। এটা একেবারেই ‘অপরাজনীতি’ ছাড়া কিছু নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *