যমুনা ওয়েব ডেস্কঃ প্লাস্টিক কিম্বা বর্জ্য প্লাস্টিক দ্রব্য ক্রমশ বিশ্বের জন্য মারাত্মক বিপদের কারন হয়ে উঠছে । প্লাস্টিক অপচনশীল, ফলে মাটিতে কিম্বা জলে মিশে গেলেও নষ্ট হয়না । এবার এই বর্জ্য প্লাস্টিক নষ্ট করার অভিনব আবিস্কার করে ফেললেন এক বিজ্ঞানী । গবেষণার মাধ্যমে এমন একটি ফাংগাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যেটি প্লাস্টিক ধ্বংস বা নষ্ট করে ফেলতে পারবে । বর্তমান পৃথিবীতে এই আবিস্কার সত্যিই অভাবনীয়, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না ।
সামান্থা জেংকিনস নামে একজন বিজ্ঞানী আকস্মিকভাবে আবিস্কার করে ফেলেছেন এমন একটি ফাংগাস যা কিনা আক্ষরিকভাবে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলতে পারে । তবে অবাক করার বিষয় সামান্থা জেংকিনস নামের উক্ত বিজ্ঞানী অন্য বিষয়ের উপর গবেষণা করছিলেন । কিন্তু ঘটনাচক্রে এই ছত্রাক বা ফাংগাস তিনি আবিস্কার করে ফেলেন । তিনি যে প্রকল্প নিয়ে গবেষণা করছিলেন, সেটি ছিল জৈব-ভিত্তিক পদার্থকে ইনসুলেশন প্যানেল তৈরিতে কীভাবে ব্যবহার করা যায় – সেটা পরীক্ষা করা। কিন্তু এই প্লাস্টিক-খেকো ‘ক্ষুধার্ত ফাংগাস’ তাদের গবেষণাকে নিয়ে গেল অন্য আরেক দিকে।সামান্থা জেংকিনস বর্তমানে বায়োহম নামে একটি বায়ো-ম্যানুফ্যাকচারিং ফার্মের প্রধান বায়োটেক প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত আছেন ।
জানা গেছে, এই ফাংগাস আবিস্কার করার পর সামান্থা জেংকিনস সেটি নিয়ে পরীক্ষা করেন । তিনি পি ই টি আর পলিইউরিথেনের ওপর এর প্রভাব কেমন হয় সেটি পরীক্ষা করেন । দেখা যায়, সেটি এগুলি খেয়ে ফেলছে । সামান্থা জেংকিনসের কথায়, ‘আপনি প্লাস্টিক দিচ্ছেন, ফাংগাসটা সেই প্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে। তার পর ফাংগাস জন্ম দিচ্ছে আরো ফাংগাসের – আর সেটা থেকে আপনি নানা রকম বায়ো-মেটিরিয়াল বা জৈবপদার্থ তৈরি করতে পারছেন। আর এই জৈব পদার্থ নানা কাজে লাগানো যেতে পারে, খাবার তৈরির জন্য, পশুর জন ফিডস্টক তৈরিতে, এমনকি এন্টিবায়োটিক তৈরির কাজে।’
বর্তমানে এই ফাংগাস নিয়ে আরও পরীক্ষা নিরিক্ষার কাজ শুরু হয়েছে । বায়োহম সংস্থা এখন কাজ করছে কীভাবে এই ফাংগাসকে আরো শক্তিশালী করে তোলা যায় । প্লাস্টিক এখন সারা বিশ্বে স্থলভাগে ত বটেই, এমনকি মহাসাগরের গভীর তলদেশেও ছড়িয়ে গেছে । বিজ্ঞানীদের মতে একটি মাত্র প্লাস্টিক ব্যাগ মাটিতে মিশে যেতে সময় লাগে প্রায় এক হাজার বছর। ফলে যদি সত্যিই এই প্লাস্টিক খাদক ফাংগাস জাদু দেখাতে পারে, তাহলে একদিন আমাদের এই পৃথিবী প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে মুক্তি পাবে ।