যমুনা বাংলা ওয়েব ডেস্কঃ রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে বাংলাদেশের এমনিতে সমস্যার শেষ নেই, এরই মধ্যে নতুন সমস্যা হাজির। জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে তাদের নিজস্ব মুদ্রা ছেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের গ্রুপে তারা এ মুদ্রার পক্ষে প্রচারণাও শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে কয়েকটি ক্যাম্পে এ মুদ্রা চালু হয়েছে। অচিরেই প্রত্যেক শরণার্থী ক্যাম্পে এ মুদ্রা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
প্রাথমিকভাবে ১ হাজার, ৫০০ এবং ১০০ টাকার নতুন নোট ছেড়েছে আরসা। আরসার নেতা আতাউল্লাহর ছবি।রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের একাধিক সূত্র জানান, আরসার সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন মুদ্রার বিষয়ে প্রচারণা শুরু করেছে কয়েক মাস আগে। কিছু কিছু ক্যাম্পে এরই মধ্যে নতুন মুদ্রা দিয়ে বিনিময় শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আরসার নিয়ন্ত্রণাধীন ক্যাম্পগুলোতে নতুন মুদ্রা দিয়ে বিনিময় পুরোদমে শুরু হবে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আরসার নতুন মুদ্রা প্রচলনকে বাংলাদেশের জন্য হুমকি মনে করেন সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সাধারণত কোনো দেশ প্রতিষ্ঠা লাভের পর তার নিজের মুদ্রা চালু করে থাকে। একটি জঙ্গি সংগঠন কেন মুদ্রা প্রচলন করল? বিষয়টি সন্দেহজনক। বাংলাদেশ সরকারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত।’
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শরণার্থী ক্যাম্পে আরসার মুদ্রা চালুর বিষয়টি আমাদের জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়। তবে সব চেয়ে বেশি বিচরণ করছে আরসা। ৩২টি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের মধ্যে ২৭টিতেই রয়েছে আরসার একক আধিপত্য। সৌদি আরবে বেড়ে ওঠা পাকিস্তানি নাগরিক আবু আম্মর জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহ বর্তমানে আরসার একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন। আতাউল্লাহর নেতৃত্বাধীন আরসা পাঁচটি শ্রেণিতে বিভক্ত করে শরণার্থী ক্যাম্পে তৎপরতা চালাচ্ছে। এ শ্রেণিগুলো হচ্ছে ‘ওলামা কাউন্সিল’, ‘ওলামা বোর্ড’, ‘মজলিসে আম’ এবং ‘আরকান আরমট’। তারা শরণার্থী ক্যাম্পে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি মাদক ও মানব পাচার, অস্ত্র ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। ক্যাম্পে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করতে নিজস্ব মুদ্রা চালু করেছে।