যমুনা ওয়েব ডেস্কঃ বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবাংলায় ঐতিহাসিক সংখ্যক আসন নিয়ে তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জয় লাভ করার মধ্যেও একটা কাঁটা বারবার খোঁচা দিচ্ছে শাসক দলের সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে । ২০২১ শের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় এলেও নন্দীগ্রাম আসন থেকে জয়লাভ করতে পারেন নি মমতা । এবার সেই নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটের পুনর্গণনার দাবী জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন । অন্যদিকে বিরোধী দল বিজেপিও থেমে নেই । একই অভিযোগ জানিয়ে তারাও আদালতে যেতে চলেছে ।
২০২১ শের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলার সবথেকে আলোচিত কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম । সেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রীতিমত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে নিজেকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু ফল ঘোষণার পর শেষ হাসিটা হাঁসতে দেখা গেল গেরুয়া শিবিরের সেই শুভেন্দু অধিকারীকে । ভোটের ফল প্রকাশের ঠিক পরেই ফলাফল নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । এবার নন্দীগ্রামের পাশাপাশি আরও চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতে গেল তৃণমূল কংগ্রেস ।
এদিকে তৃনমূলের চারটি আসনের পুনর্গণনার পাল্টা হিসাবে ৫০টি বিধানসভা কেন্দ্রে পুনর্গণনার দাবি জানিয়ে আদালতে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির ! এমনটাই হুশিয়ারি দিলেন পশ্চিমবাংলার বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ । জানা গেছে, নন্দী গ্রাম কেন্দ্র ছাড়াও বলরামপুর, বনগাঁ দক্ষিন, হুগলীর গোঘাট এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না কেন্দ্রে পুনর্গণনার দাবী জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মমতা সরকার । উল্লেখ্য, বলরামপুরে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন শান্তিরাম মাহাতো, বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী আলোরানি সরকার, হুগলির গোঘাটের মানস মজুমদার ও পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার সংগ্রাম কুমার দলুই । এরা প্রত্যেকেই খুব কম মার্জিনে হেরেছেন ।
শাসকদলের দেখানো পথেই এবার বিরোধী দল বিজেপি হাঁটতে চলেছে । তৃণমূল কংগ্রেসের মোট ৫ টি আসনের পাল্টা মোট ৫০ টি কেন্দ্রে পুনর্গণনার দাবী নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে তারা । গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে জানা গেছে, যে আসনগুলিতে হারের মার্জিন বেস কম, সেই কেন্দ্রগুলিকে আবার ভোট গণনার আবেদন করবে তারা । এই বিষয়ে শনিবার গেরুয়া শিবিরের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিলেন, “আমরাও ইলেকশন পিটিশন করতে চাই। বিষয়টি দেখছেন আইনি টিম।”
এদিকে পশ্চিমবাংলার রাজনৈতিক প্রাঙ্গণে মুকুল রায়কে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে জোর আলোচনা চলছে । ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য বিজেপি বেশ ভাল ফল করে । এর পিছনে যে সরাসরি মুকুল রায়ের মস্তিস্ক কাজ করেছে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তাই মনে করেন । কিন্তু সম্প্রতি মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন । অন্যদিকে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে একের পর এক বিজেপি নেতা শাসক দলের পতাকা তলে হাজির হচ্ছেন । আগামী দিনে বাংলার রাজনীতিতে মুকুল রায় আবার বেশ বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারনা ।