আবারও টাকা আত্মসাতের খবর। এদেশের মানুষ কোথায় যাবে, কাকে বিশ্বাস করবে। বিন্দু বিন্দু করে জমানো টাকা কিছু লাভের আশায় বিনিয়োগ করে সর্বশান্ত হচ্ছে।
এবার সতেরো হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ‘এহসান গ্রুপ পিরোজপুর-বাংলাদেশ’ নামের এক কোম্পানির চেয়ারম্যান ‘রাগীব আহসান’ ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ‘রাগীব আহসান’ প্রতারণার মাধ্যমে ১৭টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। যার মাধ্যমে তিনি ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতির অপব্যবহার করে এমএলএম কোম্পানির ফাঁদ তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাত করেছেন।
‘রাগীব আহসান’ দেশের অন্যতম নামকরা মাদরাসা ‘হাটহাজারীতে’ ও খুলনার আরেকটি মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। পাস করে হয়েছেন মুফতি। । কর্মজীবন শুরু করেছিলেন মসজিদে ইমামতির মাধ্যমে। তবে প্রতারক ‘রাগীব আহসান’ ইমামতিতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। ৯০০ টাকা বেতনে ঢাকার একটি এমএলএম কোম্পানিতে চাকরি নেন। সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন ‘এহসান গ্রুপ’। তারপর একে একে প্রতারণার মাধ্যমে ১৭টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হাসপাতাল, ক্যাডেট মাদরাসা, ট্রাভেল এজেন্সি বৃদ্ধাশ্রম, আবাসন কোম্পানিসহ মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। নিকটাত্মীয়দের প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসান রাগীব। নিজের তিন ভাই, বোন, তার শ্বশুর, বোনজামাইসহ অনেককে।
ইতিমধ্যে তিনি প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার গ্রেফতার দাবিতে ভুক্তভোগীরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানববন্ধনও করেছেন। অবশেষে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০-এর একটি দল গতকাল ভোরে রাজধানীর শাহবাগ এলাকার তোপখানা থেকে রাগীব ও তার সহযোগী আবুল বাশার খানকে গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার অন্য দুই ভাই মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও মো. খাইরুল ইসলামকে পিরোজপুরের খলিশাখালী নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই রাগীব অনেক বিষয় স্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন ২০০৮ সালে ১০ হাজার গ্রাহককে তার কোম্পানিতে যুক্ত করেন। ১৭টি প্রতিষ্ঠান গড়ে গ্রাহকের কাছ থেকে ১১০ কোটি টাকা তিনি সংগ্রহ করেছেন। এরই মধ্যে শতাধিক ভুক্তভোগী রাগীবের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন।