৫৩০ কোটি মোবাইল (Smartphones) ফোন পুনর্ব্যবহার (রিসাইকেল) না করে এই বছর বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেয়া হবে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক বর্জ্য বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম (ডব্লিউইইই) ফোরাম জানিয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য তথ্যের ভিত্তিতে ডব্লিউইইই ইলেকট্রনিক বর্জ্য বা ই-বর্জ্যের ক্রমবর্ধমান পরিবেশগত সমস্যা তুলে ধরে।
গবেষকরা বলছেন, অনেক মানুষ আছেন যারা পুরনো মুঠোফোন (Smartphones) পুনর্ব্যবহারের জন্য না দিয়ে তা নিজেদের কাছে রেখে দেন। এর ফলে যে সমস্যাটি দেখা দেয় তা হল, তার থেকে তামা বা রিচার্জেবল ব্যাটারি থেকে প্রাপ্ত কোবাল্ট সহজেই ই-বর্জ্য থেকে পাওয়ার কথা। কিন্তু মূল্যবান এই খনিজ সম্পদের চাহিদা খনি থেকে খনন করেই মেটাতে হচ্ছে।
ডব্লিউইইই’র মহাপরিচালক প্যাসকেল লেরয় বলেন, এসবকে আপাতদৃষ্টিতে নগণ্য বস্তু মনে হলেও বিশ্বে সামগ্রিকভাবে হিসাব করলে বেশ বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করবে। বিষয়টি মানুষ বুঝতে চায় না। বিশ্বব্যাপী আনুমানিক এক হাজার ৬০০ কোটি মুঠোফোন রয়েছে এবং ইউরোপের ফোনগুলোর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আর ব্যবহার করা হয় না।
ডব্লিউইইই জানিয়েছে, তাদের গবেষণায় যা পাওয়া গেছে তা হচ্ছে বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্যের ‘পাহাড়’। যেখানে আছে ওয়াশিং মেশিন, টোস্টার থেকে শুরু করে ট্যাবলেট, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) যন্ত্রসহ আরো কত কি! তাদের হিসাব অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে সাত কোটি ৪০ লাখ টন ই-বর্জ্য বৃদ্ধি পাবে।
এই বছরের শুরুর দিকে রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি নতুন পণ্য তৈরির জন্য ই-বর্জ্যের খনি (স্তূপ) খননের প্রচারণা চালায় এবং ইউক্রেনে যুদ্ধসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাত ইস্যুতে আলোকপাত করে। কারণ এর ফলে মূল্যবান ধাতুর সরবরাহ চেইন হুমকির মুখে পড়ছে।
ডব্লিউইইইয়ের ম্যাগডালেনা চ্যারিটানোভিজ বলেন, এই বর্জ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। যার সাহায্যে সবুজায়ন, কম কার্বন সমাজে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এমন নতুন ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা অন্যান্য সরঞ্জাম, যেমন বায়ু টারবাইন, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি বা সৌর প্যানেল তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের ই-বর্জ্যের মাত্র ১৭ শতাংশ সঠিকভাবে পুনর্ব্যবহৃত হয়। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন আগামী বছরের মধ্যে এটি ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
সূত্র : ইউএনবি