শিশু-কিশোর অপরাধ ও সামাজিক প্রেক্ষাপট

শিশু-কিশোর অপরাধ ও সামাজিক প্রেক্ষাপট

দিনকাল বাংলাদেশ
যমুনা ওয়েব ডেস্কঃ  ২০১৭ সালে বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোর মাদক সেবনের বিরোধে তাদের বন্ধুকে হত্যা করে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে মামলায় ঐ দুই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। কিশোর অপরাধের ঘটনায় পরর্বীতে আদালত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে এবং দুই কিশোরকে সাতবছর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আটকের আদেশ দেন।
রাজধানীর কামরাঙ্গীচরে সাধারণ একটি ঘটনায় সিফাত নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয় তাদের বয়স ছিল ১০ থেকে ১৪ বছরের। কিশোর অপরাধের চেহারা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিছুদিন আগে কিশোরদের মধ্যে গ্যাং কালচার দেখা যাচ্ছিল। এমনকি কিশোর বয়সের এর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এক তরুণীকে ভারতে পাচার করার ঘটনায় কয়েকজনকে ভারতের পুলিশ আটক করে।
সমাজ বিজ্ঞানের ভাষায় ৭ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোর কিশোরীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধই কিশোর অপরাধ। তবে কোন কোন দেশে এর ভিন্নতা রয়েছে। কিশোর অপরাধ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কিশোর অপরাধ এমন একটি বিষয় যার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয় করা অত্যন্ত জটিল। প্রত্যেকটি ঘটনায় রয়েছে ভিন্নতা। তবে এই মুহুর্তে দাড়িয়ে বলতে হয় কিশোর অপরাধের জন্য প্রধানত দায়ী পারিবারীক শিক্ষা।
কিশোর অপরাধ অনুসন্ধানের সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয় পরিবারকে। তবে মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ড. হিলির তথ্যমতে কিশোর অপরাধের ৩১% দৈহিক বিকাশ অস্বাভাবিক। অনেক গবেষক মনে করেন দৈহিক অক্ষমতা দূর করা গেলে কিশোর অপরাধমূলক আচরণ থেকে রক্ষা করা যেতে পারে।কিশোরদের এই ভুল পথে পা বাড়ানোর দায় পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কেউ এড়াতে পারে না। এখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও ভূমিকা রয়েছে। পরিবারের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে যদি দেখা যায় অভিভাবকরা অর্থ, বিত্ত, প্রতিপত্তি, ক্ষমতার পিছনে ছুটতে ছুটতে সন্তানকে সময় দিতে পারে না।
অভিভাবক জানে না তার সন্তানের প্রয়োজনীয়তা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উদাসীনতা। তারা চিন্তা করে সবাই তো আর মানুষ হবে না। অনেক সময় ছাত্রর কথা শুনে শিক্ষকদের অভিভাককের অপমান করা ভূমিকা পালন করে।
তুচ্ছ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে ছাত্র এলাকার একটু বড়দের নিয়ে অথবা প্রশাসনের কাছে চলে যায়। এমনকি ছাত্রর পরিকল্পিত বুদ্ধির কারনে শিক্ষক অপরাধী সাজতে বাধ্য হয়। অনেকসময় তাকে লালন পালন করা শিক্ষককে পরিকল্পিভাবে বিচারের সম্মুখীন করে। যার ফলে শিক্ষক নিজেকে গুটিয়ে নেয়।
কিশোর অপরাধকে পরিবারের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। বিশেষ করে অভিভাবকের কাছে যখন তার সন্তানের কোন অপরাধের ঘটনা আসে তখন সন্তানের পক্ষ নিয়ে ঝগড়া মারামারি অথবা সন্তানকে মারা থেকে বিরত থেকে মূল ঘটনা বের করতে হবে। মূল ঘটনা বের করে অভিভাক শান্ত ভাবে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *